Saturday, 12 May 2012

মাতৃ দিবসে দুই কবিতা



মাতৃ দিবসে দুই কবিতা

০১

অনেক গুলো ক্লান্তিকর দিন
শেষ হয়ে এলে
আনন্দে হেসে ওঠেন ঈশ্বর ;
সুনিপুণ হাতে কারিগর দীর্ঘ
সময় ধরে
দূর কোথা থেকে খুঁজে এনে
চোখ বসিয়ে দিলেন
আমি দেখলাম আশ্চর্য এক
মহিমান্বিত জগতসভা
তোমার ঘরদোর সাজানো
শস্য ভাণ্ডার অফুরন্ত খাবার !

এদিকে তুমিও চুপ থাকো নি ...
প্রতিদিন ঘুম ভাঙ্গে
জলে সিক্ত করো চারা
নিড়ানির অভিঘাতে উপ্রে আগাছা
শ্যামল রাখার চেষ্টা !

যতবার লাফিয়ে উঠি আমি শব্দে
গানে ভয়ে
লাথি মারি কষে বক্ষ জুড়ে
তীব্র যন্ত্রণায় কুঁকড়ে উঠে ও
হেসে ওঠো
ধন্যবাদে গোলা ভরিয়ে নেন ঈশ্বর !

মা ,
ওরা জানে না কতোগুলো বিনিদ্র রাতজেগে
কতরাত অভুক্ত থেকে
কত যন্ত্রণা হাসি মুখে ঢেকে
তুমি ফলিয়েছ ফসল

তোমার অস্তিত্বেই থাকবার কথা ছিল জন্ম
ভুলে গিয়েছি সেই ইতিহাস
জানোয়ার ও মাকে মনে রাখে আজীবন !

মা ০২


তোমার কি দোষ মা ?
তোমার কোন দোষ নেই মা ,
যুগে যুগে কত মা কতো মনু সন্তান ভাসিয়েছেন জলে
কতো মা ফেলেছেন চোখের জল চুপিসারে
রাতের অন্ধকারে একাকী -
আর হাতড়েছে জীয়নকাঠি
আমাকেই ভালোবেসে ,
তোমার কি দোষ বল মা ?
তুমি তো
তোমারই দুই-চার শাখা প্রশাখার জন্য ভাত চেয়েছিলে
আর আমাদের ছিল না ইচ্ছা বা আগ্রহ
তুমি তো শীতের উষ্ণতা খুজেছিলে
পুরনো কাপরে লেপ কম্বলে
সর্ষে দানায়
তেলের অপূরণীয় ভাণ্ডার
দু একজনে হাতেই আদি কাল থেকে বন্ধি
সে ভোজনে বা তেল মর্দনে ;
আমাদের শরীর হারিয়েছে সে অধিকার
জন্ম ধুয়াসা তিথি ক্ষণে !
তোমার কোন দোষ নেই মা ,
মা,মনে পরে সেই সব তুবড়ে যাওয়া মায়েদের মুখ
ভাঙ্গাচোরা মন , অন্তঃসলিলা বুকফাটা আর্তনাদ
শুঁখিয়ে যাওয়া বক্ষ সুধা ,
প্রতিরাতে
খুন করে নিজেকে
সকালে হাস্যমুখে "তাহাদের পদসেবা"
গল্প করে তোমার সাথে ?
আমার কথা বলে ?
মনে পরে মা আমার কথা.........
তোমার কোন দোষ নেই মা
তোমার কি দোষ বল মা ,
তুমি তো জানো না
আমাদের এখানে খিদে পেলে কাঁদতে নেই
আমাদের বুকে হাপরের টান এলে ওষুধ চাইতে নেই
আমাদের শীত পরলে কাপতে নেই
না হলে রঙচঙে সেমিনার সভা হবে কি করে ?
কে শুনবে ওদের কথা......।
বল মা ?
মা তুই আর কাঁদিস নে......
মা আর চোখের জল ফেলিস নে
এই বধিরদের সামনে
তুই কাঁদলে
তোর চুপসে যাওয়া মুখে
আমি প্রত্যেকটা শুঁকনো কাষ্ঠ খণ্ডে দেখি
খ্রিস্টের মুখ.........